প্রিয়দীপ






অন্তিম প্রবাহে 
~~~~~~~~~~~   সুনীল শ্রদ্ধায় 



কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে নুইয়ে পড়ল যখন স্থবিরতা
ইন্দ্রেয় কোষ গুলিতে আর সংকেত দিল না
সাইনান্স ,
সংকেতে অভ্যস্ত নিউরন বিপর্যস্ত হলো
মাথা উঁচু করে বাঁচার –
কালক্ষেপ না করে মৃত্যু হলো আমার মস্তিকের ।

রুদ্ধ  হলো ধমনী বেঁয়ে বেড়ে ওঠা
শ্বাস প্রশ্বাসের প্রতিবাদী কণ্ঠ -
পিঞ্জরে স্তুপাকৃত নিকোটিনের আমেজি ধোঁয়া
ঘনীভূত আঁধারে ডুবে গেলো আমার চোখের দৃশ্যায়ন
নিথর হলো আমার নেপথ্যর অহংকারী অবয়ব ।
ছিন্ন হলও জীবনানন্দের শস্য শ্যামলা‘র
অতিথি জাতি স্বত্বা ।

ধরিত্রী থেকে সদ্য তোলা নেপথ্যের কান্ডারী বধে
কালো নীল - নিঝুম আকাশের শূন্যতায়
বাজছে বিজয়ের দামামা -
শ্রেণী বিন্যাস হীন মৃত আত্নার উল্লাস আর
আলিঙ্গনের সমীরণে আমাকে ঘিরে তাদের রাজকীয় বায়না ।

আঁধারে মুহ্যমান স্খলিত নিশানায়
আমাকে এঁকে দিতে হবে
অসীম দিগন্তের উদ্ভাসিত নব প্রভাত -
শিশির কনায় ভেজা দুব্বা ঘাসে তৃষ্ণা নিবাড়িত ঘাস ফড়িং ।
শৈত্য সায়কিত দ্বি – প্রহরে পিঠ মেলা নীল প্রজাপ্রতি ।

কারও দাবী -
রাজপথের বক্ষে রিমঝিম বৃষ্টি -
টি এস সির বুক চিঁরে ভাস্কর্যয় তিক্ত অশ্রু জল ।
হৃদয়ের বিবর্ণ বসন্তে আবীর ছড়ানো
বর্ণালী তন্ময়তা ।

নয়তো বা -
গোধূলিতে ফিরে আসা বনের পাখি ,
সন্ধ্যায় শঙ্খ ধ্বনিতে সঙ্ঘের মিত্রতায় নীড়ে ফেরা
ভালোবাসা রূপায়িত প্রজাপ্রতি পাখানা ।
দূর আকাশের মাতাল করা চাঁদ - চন্দ্র বিন্দু থেকে চন্দ্র কথার বিলাপ ।

একান্তই না হয় -
ভাস্কর্যে গড়ে তোলো সুন্দরী অপ্সরা - মেঘলা মেয়ের আঙ্গিকে ,
তুলি আর রঙে সৃষ্টি করো বৃষ্টি ।
বজ্রের সংঘাতে ঝড়ে পড়ুক
কবিতার কৃষকের সবুজায়ানে ।
উন্মুক্ত খোলা আকাশের নিচে দাড়িয়ে থাকবে
পালঙ্ক হীন - সৈন্যহীন একা যুবরাজ,
মেঘমালার পঞ্জিভুত ক্রদনে
ভেঙ্গে চুরমার করে দাও তার দম্ভের রাজকীয়তা ।

হে পরম প্রিয়ময়,
তোমাদের এই নিস্পলক নেত্র’র চাহুনিতে
স্খলিত অবয়বে - উদ্গ্রিবতা বাড়ে আমার নীল কণ্ঠে-
ভিড় করে ধেয়ে আসে সদ্য ফেলে আসা ছায়াপথ ,
ঠাই দেওয়া সুধাজয়ার বেড়ে ওঠা আমার আমি
ছাড়পত্র হীন জন্মের বেওয়ারিশ আস্তানা ।

আস্তানার জানলা গলিয়ে দিগন্তে কুয়াশার চাদরে মোড়া খোলা মাঠ ,
কাঠ কয়লা পেরিয়ে রঙ জলে আঁকা দুরন্ত গোধূলিতে গোল্লাছুটের কিশোরী ,
শেষ আঁকা ক্যানভাসে পারুলের সরু ফালির ওষ্ঠ
মুদ্রিত অক্ষরে আমার জন্মে দেখা ইতিবৃত ।
পরিশেষে আগুনের সঙ্গে দৈহিক পাঞ্জা কষা
প্রজ্বলিত শিখাহীন প্রিয়দীপ।

তোমাদের চাওয়া পাওয়ায় মাঝে ভারাক্রান্ত আজ আমার নশ্বর
অকর্ণমতার স্খলিত পীড়ায় লজ্জায় মাথা নুয়ে দিলাম তোমাদের চরনে ।

বরং এসো সবে -
এমন হাজারো আত্মার সান্নিধ্যে 
খোলা কলমে রাঙিয়ে দেই আত্মকথা
স্বপ্নের তরী জলে ভাসাই - নিঃশব্দ শুভেচ্ছায়
সৃষ্টি সুখের উল্লাসে ।


উত্তরবঙ্গ
♪♫•*¨*•.¸¸


Previous Post Next Post

বিজ্ঞাপন