অংকন নন্দী






নীরাকথা

বিভাবরী ঢলে পড়ে ক্রান্তিসীমায়,
শেষপ্রহরের ডানা ঝাপটানো সন্ত্রস্ত বিহঙ্গ
মুখ গুজে আলস্যে নিজভূমে;
আর আমি রাতপোষাক আগলে বাইরে আসি।
প্রতিদিন এসময় মেয়েটাকে দেখি অপলক-
নিবীড় রাত্রিভূক নিস্তব্ধতায় সহজাত মৌনতায়,
ধীর লয় বিরাণ চরণে তার আপেক্ষিক যাত্রা
আদি হতে অনন্তে;
হয়তো বা প্রারম্ভিক ঠিকানায় গমন-
সূচনার সন্ধানে ।।
শুধাই তারে- কে গো, দেবলীনা?
নাকি ভূমির কোন অতৃপ্ত শব ছুঁড়ে,
কায়া বিহনে কোন এক শূন্য বাসনা-
পূর্ণতা দেয়ার একাগ্রমানসে, এ তোমার অগস্ত্যযাত্রা!
সে নারী মায়াদৃষ্টে চায়- কৃষ্ণমদির আঁখিতারায়;
ফিসফিসিয়ে অনুচ্চ স্বরে শুধায়-
আমি নীরা…
আমি সেই- নীরা…
সুনীলের ফেলে যাওয়া পথ ধরে-
তাঁকেই খুঁজে ফেরার অন্তহীন অণুচেষ্টা,
জীবন মৃত্যুর দ্রাঘিমায় ।।
আঁতকে উঠে বলি স-উৎকন্ঠ স্বরে,
না না নীরা যেওনা তুমি!
মহাপ্রস্হান অধ্যায় এখনও নয় তোমার বরণীয়;
কত কাজ এখনও অধরাই রয়ে গেল!
তোমায় দাঁড়াতে হবে প্রতিটি কাঠগড়ায়,
প্রতি অপরাধীর সামনে দাঁড়াবে তুমি;
প্রগাঢ় গান্ডীব মহিমায়।
তোমায় আলতো ছোঁয়াব তাদের,
কারণ সুনীল বাবুর কাছ থেকে-
নির্জন নিভৃতে এটুকুই জেনেছি আমি,
তোমায় ছোঁয়া হাতে পাপ শোভা পায়না;
যে মুখ একবার বলে ভালোবাসি-
সে মুখ ছোঁয়ার সাহস হারায় সকল মিথ্যে।
তাই সুনীলের অসমাপ্ত কাজটুকু তো-
তোমাতেই বর্তায় নীরা ।।



পুনঃ -  (  জগতের সব নারীই নীরা । সবার মাঝেই আছে নীরাসত্ত্বা। নারীই পারে পুরুষকে অন্যায়-মিথ্যা থেকে বিরত করতে। 
তাই আসুন নারী, নীরাকে অন্তরে ধারণ করে এক একটি সুনীলকে সত্যসুন্দরের পথে এনে পৃথিবীকে স্বর্গরূপ দেয়ার গুরুদায়িত্ব নিজেতেই সমর্পিত করুন। )

চট্টগ্রাম । 
Previous Post Next Post

বিজ্ঞাপন